About Us Contact Us Privacy Policy Terms & Conditions Copyright

থাই পেয়ারা-৫ ও থাই পেয়ারা-৭ এর বৈশিষ্ট্য ও চাষ পদ্ধতি

Please don't forget to share this article

থাই পেয়ারা-৫ ও থাই পেয়ারা-৭ এখন বাংলাদেশে চাষ হচ্ছে যা থাইল্যান্ড থেকে আগত। বেশি ফলন ও বেশি দামের জন্য এ পেয়ারা এরই মধ্যে দেশের ফল চাষিদের মধ্যে বিপুল সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে। রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া ও ঈশ্বরদীর অনেক ফল চাষি থাই পেয়ারা চাষ করে তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জন করেছেন। থাই পেয়ারার জাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট জাতটি হলো থাই পেয়ারা-৭।

থাই পেয়েরা-৭ এর আকার গোলাকার, রঙ হলদে সবুজ, প্রতিটি পেয়ারার ওজন গড়ে ৪০০ থেকে ৭০০ গ্রাম। গাছের উচ্চতা ২.৫ থেকে ১০ মিটার। ফুল ফোটা থেকে ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত ৯০ দিন সময় লাগে। এ জাতের বড় বৈশিষ্ট্য হলো- বারো মাসই এ পেয়ার পাওয়া যায়। বীজ কম ও নরম। এ জাতের পেয়ারা বর্তমানে রাজধানী ঢাকা শহরে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

থাই পেয়ারা চাষ পদ্ধতিঃ অন্যান্য জাতের পেয়ারার মতোই মধ্য জ্যৈষ্ঠ থেকে মধ্য আশ্বিন মাসে থাই পেয়ারা-৭ এর চারা রোপণ করতে হয়। এ পেয়ারা চাষের জন্য নিকাশযুক্ত বেলে দোআঁশ মাটিই উত্তম। এ পেয়ারার বংশবৃদ্ধির জন্য বীজ থেকে চারা বা গুটি কলম ব্যবহার করা উচিত। চার বাই চার বা তিন বাই তিন মিটার দূরত্বে এ জাতের পেয়ারার চারা রোপণ করা যায়। রোপণের কয়েক সপ্তাহ আগে ৫০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য, ৫০ সেন্টিমিটার প্রস্থ ও ৫০ সেন্টিমিটার চওড়া গর্ত খনন করতে হবে। প্রতিটি গর্তে মাটির সঙ্গে চারা রোপণের ২০ থেকে ৩০ দিন আগে ৪০ থেকে ৫০ কেজি পচা গোবর সার, ১৫০ গ্রাম টিএসপি ও ১৫০ গ্রাম এমওপি সার মিশিয়ে দিতে হবে। তারপর সার মিশ্রিত মাটি দ্বারা গর্ত ভরাট করে গর্তের মাঝখানে চারাটি রোপণ করতে হবে। চারা রোপণের পর গর্তের চারদিকে মাটি দ্বারা উঁচু করে বেঁধে দিতে হবে, যাতে বাইরের পানি এসে গাছের গোড়ায় না জমে। গাছটি যাতে বাতাসে হেলে না পড়ে সেজন্য বাঁশের খুঁটির সঙ্গে হালকাভাবে বেঁধে দিতে হবে। রসের অভাব হলে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। পেয়ারা গাছ থেকে অধিক ফলন পেতে পাঁচ বছরের নিচের একটি গাছে বছরে পচা গোবর ২০ থেকে ২৫ কেজি, ইউরিয়া ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম, টিএসটি ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ও এমওপি ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম এবং পাঁচ বছরের ওপর একটি গাছে প্রতি বছর পচা গোবর ২৫ থেকে ৩০ কেজি, ইউরিয়া ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম, টিএসপি ৪৫০ থেকে ৫৫০ গ্রাম, এমওপি ৪৫০ থেকে ৫৫০ গ্রাম সার ব্যবহার করতে হবে। উল্লিখিত পরিমাণ সার সমান দুইভাগে ভাগ করে বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ এবং আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে দুই কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। সার প্রয়োগের পর প্রয়োজনে সেচ দিতে হবে। অনেক সময় জিঙ্কের অভাবে পাতার শিরায় ক্লোরোসিস দেখা যায়। সেক্ষেত্রে ৮০ লিটার পানিতে ৪০০ গ্রাম জিঙ্ক ও ৪০০ গ্রাম চুন মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে হবে। পেয়ারা সংগ্রহের পর ভাঙা, রোগাক্রান্ত ও মরা শাখা-প্রশাখা ছাঁটাই করে ফেলতে হবে। পেয়ারা গাছ প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যক ফল দিয়ে থাকে। গাছের পক্ষে সব ফল ধারণ সম্ভব হয় না। তাই মার্বেল আকৃতির হলেই ঘন সন্নিবিষ্ট ফল ছাঁটাই করতে হবে। ভালোভাবে যত্ন নিলে একটি পূর্ণবয়স্ক গাছে গ্রীষ্মকালে ৬০ থেকে ৭০ কেজি এবং হেমন্তকালে ৫০ থেকে ৬০ কেজি ফলন পাওয়া যায়।

অপার সম্ভাবনাময় এ পেয়ারা পরীক্ষামূলকভাবে এক বিঘা জমিতে চাষ করে খরচ বাদে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ পাওয়া গেছে। এ কারণে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত মানসম্পন্ন উদ্যান প্রকল্প গত বছর ৩ লাখ থাই পেয়ারার চারা উৎপাদন করে। প্রতিটি চারা মাত্র ১০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হয়। সমন্বিত মানসম্পন্ন উদ্যান প্রকল্পের পরিচালক বলেন, ২০০২ সালে থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো উন্নত জাতের পেয়ারার জাত আনা হয়। তারপর ২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আরও কয়েকটি জাত এনে দেশে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। সর্বশেষ থাই পেয়ারা-৭ জাতটির মধ্যে উৎকর্ষতা পাওয়া যায়। উদ্যান বিশেষজ্ঞরা জানান, এক বিঘা জমিতে পূর্ণবয়স্ক গাছ থাকলে ২ হাজার কেজির বেশি পেয়ারা উৎপন্ন হয়।

প্রাপ্তি স্থানঃ দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরকারি হার্টিকালচার সেন্টার, ব্র্যাক নার্সারি এবং বিভিন্ন বেসরকারি নার্সারি যেমন বগুড়ার সবুজ নার্সারি ও নাটোরের তেকুপির কৃষিবিদ নার্সারিতে থাই পেয়ারার চারা পাওয়া যায়।

 

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

As you found this post useful...

Follow us on social media!

We are sorry that this post was not useful for you!

Let us improve this post!

Please don't forget to share this article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব www.agriculturelearning.com কর্তৃক সংরক্ষিত