About Us Contact Us Privacy Policy Terms & Conditions Copyright

বস্তা পদ্ধতিতে জলাবদ্ধ জমিতে সবজি চাষের বিস্তারিত

Please don't forget to share this article

বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করতে প্রথমে প্রতি বস্তার জন্য ৩০ কেজি মাটির সাথে পরিমাণ মত জৈবসার, বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক সারসহ সামান্য পরিমাণে খৈল মেশানো হয়। পরবর্তীতে বস্তায় ভরে প্রায় ৩ ফুট উচু করে ৪-৫ দিন রেখে দিয়ে তাতে বীজ বপন করা হয়। বিভিন্ন সবজি যেমন- লাউ, উচ্ছে, করলা, ঝিঙে, পুঁইশাক, মরিচ, আদা, বরবটি, মিষ্টি কুমড়া, রসুন, পিঁয়াজ ও পেঁপেসহ বিভিন্ন প্রকার সবজির বীজ বপন অথবা চারা রোপণ করা হয়। কিছুদিন পরে বীজ থেকে চারা গজালে বাঁশ, বাঁশের কঞ্চি ও সুতো দিয়ে বুনে ভালো জব্দ করে চালা / বান / মাঁচান তৈরি করা হয়। নতুন এই পদ্ধতিকে বলা হয় বস্তা পদ্ধতিতে সবজী চাষ। জলাবদ্ধতা এলাকার বিভিন্ন ঘের ও পুকুর পাড় অথবা বাড়ির আঙ্গিনায় বর্ষা মৌসুমে এ পদ্ধতিতে সবজী চাষের আহবান উপজেলা কৃষি অফিসের।

চাষ পদ্ধতিঃ প্রথমে একটি বড় আকৃতির সিনথেটিক বস্তা নিতে হবে। তারপর বেশি পরিমাণ জৈব সার মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করে নিতে হবে। মাটিতে অধিক সময় ধরে পানি ধরে রাখার জন্য বস্তার নিচে তিন-চার কেজি শুকনো পাতা বা খড় বিছিয়ে দিতে হবে। এরপর প্রস্তুত করা মাটি দিতে হবে বস্তায়। মাটি যেন জমাট বাঁধতে না পারে সে জন্য বস্তার ঠিক মাঝখানে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত ২০ থেকে ৪০ মিমি মাপের ইটের টুকরো বা খোয়া দিতে হবে। খোয়াগুলো ভালোভাবে বসানোর জন্য একটি পিভিসি পাইপ ব্যবহার করা যেতে পারে। কাজ শেষে পাইপটি অবশ্যই খুলে ফেলতে হবে। বীজ বপন করে চাষ করা যেতে পারে। তবে চারা তৈরি করে লাগিয়ে দেওয়াই ভালো। বহু স্তরবিশিষ্ট শাকসবজি চাষ বাংলাদেশে একটি নতুন ধারণা। প্রথম দিকে দৈনিক ১৮ লিটার পানি সেচ করতে হয়। কিছু দিন পর অবশ্য সকাল-বিকেল তিন লিটার করে সেচ দিলেই হয়। আর বৃষ্টি হলে দু-তিন দিন না দিলেও সমস্যা হয় না।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, মনিরামপুর উপজেলার ভবদহ পাড়ের চাষিদের সাবলম্বী করতে ‘সুশীলন’  নামের একটি এনজিওর মাধ্যমে ১০ জন চাষিকে নতুন এই বস্তা পদ্ধতির ওপরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চাষিদের মধ্যে আলী আকবর ও আবু সাঈদ দুজনে ৩৫ শতক পতিত জমি লিজ নিয়ে প্রায় ৬ মাস পূর্বে শুরু করেন বস্তা পদ্ধতিতে বিষ মুক্ত সবজি চাষ।

সেখানে প্রায় দেড় শত বস্তা বসিয়ে বিভিন্ন প্রকার সবজী চাষ করছেন। বস্তায় লাগানো লাউ গাছে বড় বড় লাউ ঝুলছে। শুধু লাউ নয় এর পাশাপাশি তারা উচ্ছে, করলা ও ঝিঙের চাষ করেছেন। চাষি আলী আকবর জানান, শুধু লাউ, উচ্ছে, করলা ও ঝিঙে নয় মাটি গবর সার মিশিয়ে তৈরি করা বস্তায় পুইশাক, মরিচ, আঁদা, বরবটি, মিষ্টিকুমড়া, রসুন, পিয়াজ ও পেঁপের চাষও করা যাবে। তার এই সবজী ক্ষেত থেকে তিনি গত তিন মাসে ৭০ হাজার টাকার বেশি আয় করেছেন।

জলাবদ্ধ এলাকার বিভিন্ন চাষিদেরকে বস্তা পদ্ধতিতে সবজী চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। নতুন এই টেকনোলজির মাধ্যম্যে জলাবদ্ধতাকে জয় করে জলাবদ্ধ এলাকায় মানুষকে সবজি চাষের মাধ্যম্যে অনেকটাই সাবলম্বী করা সম্ভব। এই পদ্ধতির মাধ্যমে সবজী চাষ করে জলাবদ্ধ এলাকায় মানুষ সংকটকালে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।  

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

As you found this post useful...

Follow us on social media!

We are sorry that this post was not useful for you!

Let us improve this post!

Please don't forget to share this article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব www.agriculturelearning.com কর্তৃক সংরক্ষিত