Agriculturelearning

মনোসেক্স তেলাপিয়ার চাষ পদ্ধতি। রোগ ও প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা

Please don't forget to share this article

মনোসেক্স তেলাপিয়াঃ মনোসেক্স তেলাপিয়াহলো পুরুষ তেলাপিয়া মাছের চাষ। তেলাপিয়া চাষের বড় সমস্যা হলো এর  অনিয়ন্ত্রিত বংশবিস্তার। এই ধরণের অনিয়ন্ত্রিত বংশবিস্তারের কারণে পুকুরে বিভিন্ন সাইজের তেলাপিয়া মাছ দেখা যায়। যার কারণে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায় না। প্রাকৃতিকভাবেই পুরুষ তেলাপিয়া মাছের দৈহিক বৃদ্ধি বেশি। এই ধারনাকেই কাজে লাগিয়ে শুধুমাত্র পুরুষ তেলাপিয়া চাষকেই মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষ বলা হয়।

বাংলাদেশের আবহাওয়া ও প্রকৃতি মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষের জন্য খুবই উপযোগী। সমপূরক খাদ্য গ্রহণে অভ্যস্ততা, চাষে কম সময়, দ্রুত বেড়ে ওঠার ক্ষমতা এবং বাজার মূল্য বেশি থাকায় বর্তমানে অধিকাংশ মৎস্য চাষি মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

মনোসেক্স তেলাপিয়ার চাষ পদ্ধতিঃ

মনোসেক্স তেলাপিয়ার বৈশিষ্ট্যঃ

পুকুর প্রস্তুতিঃ

পোনা মজুদ ও খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ

খাদ্য উপাদান নার্সারী/ষ্ট্যাটার্ড খাদ্য(২৫-২৮% আমিষ) বাড়ন্ত মাছের খাদ্য %
ফিশ মিল ১৫% ১০
মিট ও বোন মিল ১৫% ১২
সরিষা/ তিলের খৈল ২০% ২০
চালের কুড়া/গমের ভুসি ৪৪% ৫২.০০
চিটাগুড়/আটা(গম) ৫% ৫.০০
ভিটামিন/খনিজ মিশ্রণ ১% ১.০০

খাবারের গুনগত মান বৃদ্ধি ও দাম কমানোর জন্য স্থানীয় বাজারে প্রাপ্তি সাপেক্ষে ফিশমিল এবং চালের কুঁড়ার পরিমাণ কমিয়ে ১০-২০% পর্যন্ত সয়াবিন মিল ব্যবহার করা যেতে পারে। ফিশমিলের পরিমাণ ৫% কমিয়ে মিট ও বোনমিলের পরিমাণ ৫% বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।

মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষের আয়-ব্যয়ঃ আধা নিবিড় ব্যবস্থাপনায় মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষে এবং ফসলে (চার মাস) এক জলাশয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিম্নরূপঃ

ব্যয়ের খাত সমূহ টাকা
পুকুর লীজ মূল্য ২০,০০০
পুকুর সংস্কার ব্যয় ২০০০০
পোনা ক্রয় ৩৪,০০০
সম্পূরক খাদ্য ১,৮০,০০০
সার ২০০০০
মাছ আহরণ ব্যয় ৪০০০
অন্যান্য ব্যয় ৮০০০
মোট ২,৫০,০০০

 

সম্ভাব্য আয়ঃ ৫০০০ কেজি × ৭০.০০ টাকা = ৩,৫০,০০০.০০
মুনাফাঃ ১,০০,০০০ টাকা
বছরে ২ টি ফসলে মুনাফাঃ ১,০০,০০০ × ২ = ২,০০,০০০/-

তেলাপিয়ার রোগ ও প্রতিকারঃ তেলাপিয়া অধিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন মাছ। তবে পুকুরে মাছের অধিক মজুদ, ঘনত্ব ও বদ্ধ জলজ পরিবেশে পরিত্যক্ত খাবার এবং মাছের বিপাকীয় বর্জ্য ও অন্যান্য পচনের ফলে পানি দূষিত হয়ে অনেক সময় রোগের ঝুকি বেড়ে যায়। তেলাপিয়া সাধারণত প্রটোজোয়ান প্যারাসাইট দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ অবস্থায় আক্রান্ত পুকুরে প্রতি শতাংশে ২০০-২৫০ গ্রাম চুন প্রয়োগ করতে হবে। দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য আক্রান্ত মাছকে ১,০০০ লিটার পানিতে ২৫-৩০ মিলিলিটার ফর্মালিন মিশিয়ে ৫-১০ মিনিট গোসল করাতে হবে। অনেক সময় তেলাপিয়া মাছ ষ্ট্রেপটোকক্কাস ও এরোমোনাট সেপটিসেমিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে। এরূপ হলে ১-২ গ্রাম এরিথ্রোমাইসিন বা অক্সিটেট্রাসাইকিলিন প্রতি কেজি খাবারে মিশিয়ে ৫-৭ দিন খাওয়াতে হবে।

শীতকালেও মাছ রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। এই ঝুঁকি কমানোর জন্য নিম্নোক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করা যেতে পারে-

আধুনিক চাষ পদ্ধতিঃ তেলাপিয়া চাষের জন্য অনেক আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। পুকুরে চাষ করার পাশাপাশি খাঁচা তৈরি করে এ মাছ চাষ করা হচ্ছে হাওর-বাওর, বিল ও নদীতে।

খাঁচার আয়তনঃ ২০ ফুট ×২০ ফুট × ৬ ফুট অথবা ১০ ফুট × ১০ফুট × ৬ ফুট আকারের খাঁচা তৈরি করা যেতে পারে। খাঁচায় যে ধরনের জাল ব্যবহার করা হবে তার মেশ সাইজ হবে ৩/ইঞ্চি থেকে ১১/ ইঞ্চির মধ্যে। খাঁচার প্রতি ঘনমিটারে ৩০-৪০ টি পোনা দিতে হবে এবং পোনার ওজন হবে ২৫-৩০ গ্রাম।

মাছ আহরণ ও উৎপাদনঃ আধা-নিবিড় পদ্ধতিতে চাষ করলে ৩-৪ মাসে তেলাপিয়া মাছের গড় ওজন ২০০-২৫০ গ্রাম হবে। জাল টেনে ও পুকুর শুকিয়ে মাছ ধরতে হবে। এ পদ্ধতিতে ৩-৪ মাসে একর প্রতি ৫-৬ টন উৎপাদন পাওয়া সম্ভব।

প্রয়োজনীয় পরামর্শঃ

 

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

As you found this post useful...

Follow us on social media!

We are sorry that this post was not useful for you!

Let us improve this post!

Please don't forget to share this article