ক্যকটাস (cactus)।ক্যাকটাসের জাতসমূহ এবং এর বংশবিস্তার
ক্যকটাস (cactus ) হলো ফণীমনসা জাতীয় গাছ। এটি পর্ণকান্ডে রুপান্তরিত হয়ে পাতা ও কান্ডে পানি সঞ্চয়ের কাজ করে থাকে। এদের ডালে পানি ধরে রাখার নিজস্ব ক্ষমতা আছে বলে ক্যাকটাস মরু এলাকায় ভাল জন্মে। এগুলো দেখতে পশমের কুশনের মত,উপরে শুঁয়া থাকে এবংএর উপরে ফুল ফোটে, ক্যাকটাসের ফুলের শোভা অতুলনীয়। গ্রীক শব্দ “ক্যাকসে” থেকে ক্যাকটাসের নাম হয়েছে। “ক্যাকসে” শব্দের অর্থ কাঁটায় পরিপূর্ণ। ক্যাকটাসের আদি অবস্থান মেক্সিকোতে।
ক্যাকটাসের ব্যবহারঃ বর্তমানে ফুলের জন্য ও বাগানে কৃত্রিম পাহাড়ের শোভা বৃদ্ধিও জন্য এবং ঘরের বারান্দা, ছাদ, সিড়ি,ও বাগানের রাস্তার দুপাশ শোভিত করার জন্য ক্যাকটাসের চাষ করা হয়।
ক্যাকটাসের জাতঃ আমাদের দেশে পাওয়া যায় এমন অসংখ্য জাতের ক্যকটাস আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু ক্যাকটাসের নাম নিচে দেওয়া হলোঃ
Rat tails Cactus; Astrophytum; Cereus; Cephalo Cereus; Clestro Cactus ; Dolichothele; Echino; Epiphullum; Fero Cactus; Gymno Calycium; Melo Cactus; Noto Cactus; Opuntia; Lobivia; Mammillaria;Rfbuta; Heliocereus; Pereskia; Rhipsalis ইত্যাদি।
মাটি ও জলবায়ুঃ এদের উপযোগী জলবায়ু হচ্ছে উষ্ণ,শুস্ক এবং বেলে মাটি। মাটিতে যেন পানি জমে না থাকে এবং প্রয়োজনমতো পানি সরবরাহ করা যাবে, এদুটি বিষয় নিশ্চিত করলে ক্যাকটাসের চাষ করা অনেক সহজ হবে।
ক্যাকটাসের বংশবিস্তারঃ
(১) জোড় কলমঃ সমমানের দুটি গাছের মধ্যে একাজ করা যায়। এরজন্যে সুক্ষ্ণ হাতের ছোয়া লাগবে। চ্যাপ্টা জোড় কলম বাঁধা সবচেয়ে উত্তম। স্টক ক্যাকটাসের আগার দিকটা শোধন করা ধারালো ছুরি দিয়ে কাটতে হবে তেরছাভাবে। এবার উন্নত জাতের ক্যাকটাসের আগার দিক থেকে সমান মাপে কেটে আনা অংশটুকু এমনভাবে বসাতে হবে যেন,দুটি অংশের মধ্যে কোন ফাঁক না থাকে। এবার একটু পরিষ্কার তুলো বা নরম কাপড় দিয়ে দুটি অংশ একত্রে বেঁধে দিতে হবে। কিছুদিনের মধ্যে জোড়া লেগে যাবে।
(২) কাটিং পদ্ধতিতে বংশবিস্তারঃ কিছু কিছু জাতের ক্যাকটাসের কাণ্ড ও শাখা টুকরা করে মাটিতে পুঁতে রাখালে নতুন চারা গজায়। আবার কাণ্ড ও শাখার জোড়া জায়গাটিতে ভিজে মস জড়িয়ে রাখলে সেখান হতে শিকড় জন্মায়।
(৩) বীজঃ বীজ দ্বারাও ক্যাকটাসের বংশবৃদ্ধি হয়ে থাকে। টবে বা চারা বাক্সে গাছ লাগানোর একমাস আগে মিশ্রণ (দোঁআশ মাটি একভাগ, বালি এক ভাগ,গুড়ো কাঠ কয়লা এক ভাগ,জৈব সার এক ভাগ,ডিমের খোসা ১০/১২ টি,হাড়ের গুড়ো এক মুঠো) তৈরি করে নিতে হবে। ক্যাকটাস চাষে কোন রাসায়নিক সার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। উপরে বীজ ছড়িয়ে তার উপর বালু দিয়ে হাল্কাভাবে ঢেকে দিতে হবে। মিশ্রণ বেশি ভেজা বা শুকনা হবে না। বীজ থেকে চারা গজাতে অনেক সময় লেগে যায়।
টবে ক্যাকটাস চাষঃ টবের এক তৃতীয়াংশ জায়গা জামা দ্বারা বভরাট করতে হবে। বাকি অংশে উল্লেখিত মিশ্রণ দিতে হবে। শাখা কলম বা চারা প্রথমে ক্ষুদ্রাকার টবে লাগাতে হবে এরপর আস্তে আস্তে বড় টবে স্থানান্তর করতে হবে। ফুটন্ত গরম পানিতে ৩ গ্রাম ক্যাপ্টান দিয়ে টব ও ঝামা ডুবিয়ে রেখে শোধন করে নেয়া ভাল।
মিশ্রণঃ দোআঁশ মাটি একভাগ, বালি এক ভাগ,গুড়ো কাঠ কয়লা এক ভাগ,জৈব সার এক ভাগ,ডিমের খোসা ১০/১২ টি,হাড়ের গুড়ো এক মুঠো। গাছ লাগানোর একমাস আগে এ মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। ক্যাকটাস চাষে কোন রাসায়নিক সার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। টবের উপর হতে ৩ সেমি জায়গা খালি রেখে মিশ্রণের মাটি দিয়ে ভরাট করে তার উপর হালকাভাবে পরিস্কার বালি ছিটিয়ে দিতে হবে।
ক্যাকটাসের পরিচর্যাঃ ঠিক যতটুকু দরকার ততটুকু পরিচর্যা করতে হবে। পানি কম হলে গাছের বৃদ্ধি কমে যাবে আবার বেশি হলে গাছ মারা যাবে। সকালের দিকে সেচ দিতে হবে। গাছে কুড়ি আসা থেকে ফুল ফোটা পর্যন্ত অল্প অল্প করে সে সেচের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
ক্যাকটাসের রোগ বালাইঃ ক্যাকটাসে সাধারণত রোগ-পোকা মাকড়ের আক্রমণ হয়না বল্লেই চলে, তবে যদি গাছের বৃদ্ধিকম ও সতেজতার অভাব ঘটে তবে লক্ষ্য করতে হবে যে রোগ- পোকার অক্রমণ হয়েছে কিনা।
ক্ষুদে মাকড়সার আক্রমণ হলে তাতে তামাক ভেজানো পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। মিলিবাগের আক্রমণ হলে ১ লিটার পানিতে ১ মিলি ডাইমেক্রণ মিশিয়ে গাছে ছিটিয়ে দিতে হবে।
গোড়া পচা রোগ দেখা দিলে আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়িয়ে ফেলা ভাল। গ্রীস্ম ও বর্ষায় ১ লিটার পানিতে ৫ গ্রাম ব্লাইটক্স ও ১ লিটার ডাইমেক্রণ মিশিয়ে গাছে ১০ দিন পর পর ব্যবহার করলে সহজে রোগ ও পোকার আক্রমণ হতে পারেনা। টবের মাটি তৈরীর সময় প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম ব্লিটক্স মিশিয়ে মাটি ভিজিয়ে দিলে রোগের আশংকা থাকেনা। টবের মাটি ও আশ-পাশ পরিষ্কার রাখা দরকার।
1977 total views, 1 view today
How useful was this post?
Click on a star to rate it!
We are sorry that this post was not useful for you!
Let us improve this post!
Thanks for your feedback!